• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ২২শে কার্তিক ১৪৩২ রাত ১১:০৩:৩৩ (06-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

নিকোটিন পাউচ কারখানার অনুমোদন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুব সমাজকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে রোগ সৃষ্টিকারী নিকোটিন পাউচ কারখানার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা)। তাদের এ সিদ্ধান্ত কেবল হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপন্থীই নয় বরং সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষা নীতিরও সম্পূর্ণ বিপরীত।নিকোটিন পাউচ তামাক কোম্পানিগুলোর নতুন নেশার ফাঁদ। এটি মুখে রেখে ব্যবহার করায় দ্রæত নেশা তৈরি করে এবং তরুণদেরকে সহজেই আকৃষ্ট করে। অত্যন্ত আসক্তিকর ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতার পর ইতোমধ্যে নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, রাশিয়া, ফ্রান্সসহ ৩৪টি দেশ এই পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের জন্য ফিলিপ মরিসকে দেয়া অনুমোদন বাতিল করতে হবে।৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেজার সামনে প্রধান সড়কে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল এডভোকেটের যৌথ আয়োজনে রোগ সৃষ্টিকারী নিকোটিন পাউচ কারখানার অনুমোদন বাতিল করা হোক শীর্ষক একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি বক্তারা এসব কথা বলেন।বেজার এই জনস্বাস্থ্য বিধ্বংসী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল এডভোকেটস (বিটিসিএ) এর আহ্বায়ক ইকবাল মাসুদ, স্থানীয় সরকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাগুফতা সুলতানা, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক ফারাহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোজেক্ট অফিসার আবু নাসের অনিক, মানসর প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর উম্মে জান্নাত, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমান, নাটাবর প্রোজেক্ট ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ প্রমূখ।তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মী আবু রায়হানের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নিকোটিন পাউচ ধূমপানের বিকল্প হিসেবে কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। একটি নেশা থেকে দূরে রাখার জন্য আরেকটি নেশায় আসক্ত করে তোলা কোন ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে না। গবেষণায় দেখা গেছে নিকোটিন পাউচ মুখ, মাড়ি, ফুসফুস, লিভার ও কিডনির ক্ষতি করে। এছাড়া হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এবং কিশোরদের মস্তিষ্কের বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ ধূমপান কমানোর অজুহাতে একটি নতুন নেশায় জনগণকে আসক্ত করার অপপ্রয়াস চলছে।বক্তারা আরও বলেন, ২০১৬ সালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার রায়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিল দেশে নতুন কোনো তামাক কোম্পানি বা কারখানার অনুমোদন দেওয়া যাবে না। বরং বিদ্যমান তামাক কোম্পানিগুলোকে অন্য শিল্পে রূপান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেজার এই অনুমোদন শুধু জনস্বাস্থ্য ও সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক দায়িত্বের পরিপন্থী নয়, বরং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনারও লঙ্ঘন। পাশাপাশি এ সিদ্ধান্ত নৈতিকভাবেও অগ্রহণযোগ্য। জনস্বাস্থ্য রক্ষার নামে নতুন নেশা ছড়ানোর অধিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে যৌথভাবে কাজের অঙ্গীকার করেছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনেও এই ধরনের নিকোটিন পণ্য নিষিদ্ধের কথা স্পষ্টভাবে বলা আছে।অনুষ্ঠান শেষে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বরাবর চার দাবি সম্বলিত একটি স্মরকলিপি দিয়েছে বাটা ও বিটিসিএ।এ চার দাবিগুলো হলো: ফিলিপ মরিস কোম্পানিকে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; আদালতের রায় ও সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্যবিরোধী কোনো পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন প্রদানে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে; এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে বেজাকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।