অনলাইন ডেস্ক: দেশের ব্যাংক আমানতের ক্ষেত্রে এক অসাধারণ বৈষম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেখানে রাজধানীর মাত্র দুটি এলাকা—মতিঝিল ও গুলশান—পুরো দেশের মোট আমানতের প্রায় ২০ শতাংশ ধারণ করে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই দুই থানা এখনো ঢাকার আর্থিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে। বিপরীতে, অভিজাত গুলশানের পাশেই অবস্থিত ভাষানটেক থানায় মোট আমানতের পরিমাণ সবচেয়ে কম, যা দেশের মোট আমানতের মাত্র ০.০১ শতাংশ।


বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩-২৪ অর্থবছর (৩০ জুন, ২০২৫ পর্যন্ত) এর হিসাব অনুসারে, মতিঝিল ও গুলশান থানায় মোট ব্যাংক আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯৬ হাজার ৭২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে মতিঝিলে রয়েছে দেশের মোট আমানতের ১০.২ শতাংশ এবং গুলশানে ৯.৭ শতাংশ। যদিও বহু ব্যাংক তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে সরিয়ে নিয়েছে, তবুও ব্যবসা-বাণিজ্যের পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ হিসাবগুলো মতিঝিলে রয়ে যাওয়ায় লেনদেনের কেন্দ্র হিসেবে এলাকাটি তার শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।

অন্যদিকে, গুলশান এলাকায় বহুজাতিক ও বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বেশি হওয়ায় এখানেও বিপুল পরিমাণ লেনদেন হয়।
তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায়, সারা দেশের মোট আমানতের একটি নগণ্য অংশ রয়েছে ভাষানটেক থানায়। এখানকার আমানতের পরিমাণ মাত্র ২৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
ব্যাংকারদের মতে, ভাষানটেক তুলনামূলক নতুন এবং নিম্ন আয়ের মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে কোনো বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প-কারখানা না থাকায় ব্যাংক আমানতের প্রধান উৎস হলো ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ব্যক্তিগত সঞ্চয়। এ কারণে ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই অনেক কম।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভাষানটেক এলাকায় ২০২৫ সালের জুন শেষে ব্যাংক হিসাব ছিল পাঁচ হাজার ৭২৫টি, যা এক বছর আগে (২০২৪ সালের জুনে) ছিল পাঁচ হাজার ৬৫৪টি। এক বছরে হিসাব বেড়েছে মাত্র ৫১টি এবং আমানত বেড়েছে পাঁচ কোটি চার লাখ টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ভৌগোলিক বণ্টন ঢাকার বাণিজ্যিক ভারসাম্য বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। মতিঝিল ও গুলশান এখনও প্রধান আর্থিক কেন্দ্রস্থল, আর ভাষানটেক সবেমাত্র এই পথে যাত্রা শুরু করছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available